Social Icons

Featured Posts

কবিতাময়ীর কাব্যনীড়ে আপনাকে স্বাগতম!

'বিনোদিনী/ আয় না চোখে/ আকাশ আঁকি/ জোনাকি রঙের পদ্য লিখি/ আয় মনে আয়/ আয় বনে আয়/ পাখির ছায়ায় লুকিয়ে থাকি ....'

ভালবাসবো

'আজ রাতে/যখন জানালামুখো আকাশে/উঠবে চাঁদ, নাভিতে তামাম কোলাহল,/তখন/এতো ভালবাসবো তোমাকে .../এতো ভালবাসবো ...যে/আমাকে ইশ্বর বলে মনে হবে ......'

স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো

শত বছরের শত সংগ্রাম শেষে, রবীন্দ্রনাথের মতো দৃপ্ত পায়ে হেঁটে/অতঃপর কবি এসে জনতার মঞ্চে দাঁড়ালেন।/তখন পলকে দারুণ ঝলকে তরীতে উঠিল জল, হূদয়ে লাগিল দোলা, জনসমুদ্রে জাগিল জোয়ার সকল দুয়ার খোলা।/কে রোধে তাঁহার বজ্রকণ্ঠ বাণী?/গণসূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শোনালেন তাঁর/অমর কবিতাখানি:‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

মনে থাকবে?

'পরের জন্মে বয়স যখন ষোলোই সঠিক/ আমরা তখন প্রেমে পড়বো/ মনে থাকবে?' বুকের মধ্যে মস্ত বড় ছাদ থাকবে/ শীতলপাটি বিছিয়ে দেব; সন্ধে হলে বসবো দু'জন। একটা দুটো খসবে তারা/ হঠাৎ তোমার চোখের পাতায় তারার চোখের জল গড়াবে, কান্ত কবির গান গাইবে/ তখন আমি চুপটি ক'রে দু'চোখ ভ'রে থাকবো চেয়ে.../ মনে থাকবে?

'আনমনে' রত্নদীপা

'আমি যখন কবিতা লিখি/তখন দূর থেকে , আমাকে/স্ফটিক রঙের দুঃখের মতো দ্যাখায় ...!'

শুক্রবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৬

যদি রাজদণ্ড দাও - অসীম সাহা

ক্ষমার অযোগ্য যদি কোনো ভুল হয়ে থাকে,
আর সেই ভুলের জন্যে যদি বদলে যায় ভৌগোলিক সীমা,
যদি আত্মজের নিক্ষিপ্ত তীর শূন্যতায় উড়ে গিয়ে
শক্তিশেল হয়ে বেঁধে তোমার শরীরে-
তুমি তবে কোন্ দণ্ড দেবে ?
যদি রাজদণ্ড দাও- আমি মাথা পেতে নেবো।

পিতা, একদিন তুমি ছিলে স্বপ্নের ভেতরে,
তোমার স্বপ্নের মধ্যে আমি খুঁজে পেয়েছিলাম
আমার অখণ্ড নীলাকাশ;
কিন্তু তুমি তো জানো পিতা, স্বচ্ছ সুন্দর সেই নীলাকাশকে
ঢেকে দেয় যে-শ্রাবণের ঘন কালো মেঘ
আর তার পেছনে লুকিয়ে থাকে যে-বজ্রের হুংকার
উদ্ধত আক্রোশে গর্জে উঠে পৃথিবীকে ভস্মীভূত করে,
আসি সেই গর্জনের অগ্নি থেকে জেগে ওঠা বিভ্রান্ত বালক
কিছুতেই বুঝতে পারিনি
আমি তোমাকে আঘাত করে
আমারই অস্তিত্বের মূলে আঘাত করেছি।
তার জন্যে আমাকে এখন যে শাস্তি দেবে দাও-
আমি মাথা পেতে নেবো।
যদি রাজদণ্ড দাও- যদি নির্বাসন দিয়ে দাও
আফ্রিকার দুর্গম গহন অরণ্যে
আমি মেনে নেবো, এ-আমার আত্মঘাতী বিনাশের যোগ্য পুরস্কার।

পিতা, যদি জানতাম, আমারই ভুলের জন্যে
এতো রক্ত, এতো ক্লেদ জমা হবে পিতৃভূমিতে,
যদি জানতাম, নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে তোমারই বুকের রক্তে
রঞ্জিত হয়ে যাবে মানচিত্র আমার,
যদি জানতাম, মধ্যরাতে তোমারই ছায়ারা এসে
তোমাকেই বধ করবে নির্মম দু’হাতে;
যদি জানতাম, তোমার নিথর দেহ রক্তাপ্লুত পড়ে থাকবে
উপবাসী সিঁড়ির ওপরে;
যদি জানতাম, তোমার বক্ষ থেকে সিঁড়ি বেয়ে
নেমে যাবে সাত কোটি রক্তের ধারা-
তা হলে এই হাতের প্রতিটি আঙুল দিয়ে
আমি শক্ত করে আঁকড়ে ধরে রাখতাম আমার উদ্ভ্রান্ত আত্মাকে,
আমি আমার চোখে বিঁধিয়ে দিতাম
অভ্রভেদী শিমুলের কাঁটা।
আমার বক্ষবিদীর্ণ আর্তচিৎকারে যদি তোমার ঘুম ভাঙতো
তুমি দেখতে পেতে, করজোড়ে তোমারই পায়ের কাছে
পড়ে আছে নতজানু তোমার সন্তান।
তুমি কী করে তাকে ক্ষমাহীন দুই হাতে ফেরাতে তখনি?

আমি জানি, পাহাড়ের অন্তরালে বয়ে যাওয়া
স্বচ্ছতরো ঝর্নাধারার মতো
তোমার হৃদয় ছিলো শান্ত স্নিগ্ধ নদী,
তোমার হৃদয় ছিলো বাউলের একতারা, ক্লান্ত ভাটিয়ালী।

পিতা, তুমি কি জানতে, তোমার হৃদয় থেকে উৎসারিত
এই জল একদিন সবকিছু ভুলে গিয়ে
তোমাকেই উগড়ে দেবে বঙ্গোপসাগরে?
তুমিহীন এই মাটি আর্তনাদ করে উঠবে
মধুমতী নদীটির তীরে?
যদি জানতে, যদি তুমি জানতে
পিতৃত্বের এই দায় তোমাকেই একদিন রক্তমূল্যে শোধ দিতে হবে;
তখনো কি তুমি এই স্বদেশের মাটি ফুঁড়ে জেগে উঠে
পরাধীন মানুষের মুক্তিমন্ত্র হতে?

পিতা, এইখানে তুমি আজ নেই- তোমার ছায়ারা পড়ে আছে।
খুব ভোরে আকাশ বিদীর্ণ করে যে-রক্তিম সূর্য ওঠে পুবের আকাশে
সবুজ প্রকৃতির মধ্যে তার গাঢ় রং মিশে গিয়ে
যে-আশ্চর্য আভা ছড়িয়ে যায় দিগন্তে-দিগন্তে,
তার মধ্যে তোমাকে আমি দেখতে পাই।
আমার প্রতিমুহূর্তের নিশ্বাসের মধ্যে
তুমি চিরকালের বাতাস হয়ে ঢুকে যাও।
আমার সবটুকু অস্তিত্বের মধ্যে তোমার মৃত্যুহীন উপস্থিতি
আমাকেই তুমি করে তোলে;
তার মানে তুমি ছাড়া আমার কোনো অস্তিত্বই নেই।
তবু তোমার উপস্থিতিহীন অস্তিত্বের ভয়ে শংকিত
একদল শিকারি তোমার ছায়ার ওপরে অন্ধকারে প্রলেপ
লাগিয়ে দিতে চায়;
একদিন তুমি যাদেরকে হৃদয়ের উষ্ণ আলিঙ্গনে বেঁধে নিয়েছিলে,
তারাই তোমার অস্তিত্বের অহংকারের ওপরে
লেপ্টে দিতে চায় পঁচিশের কালো অন্ধকার
তুমিহীন তোমার অস্তিত্ব এসে ভর করে বঙ্গভূমিতে !

মানুষই তো ভুল করে পিতা
আমার এই দেহখানি সে-ভুলেরই দাস।
যদি পারো ক্ষমা কোরো অধম সন্তানে।

আর যারা তোমারই রক্তের দামে কেনা এই স্বদেশের
মাটিকেই বদলে দিতে চায়,
লাল ও সবুজের মানচিত্রে আঁকতে চায় কলংকতিলক;
তোমার ক্ষমার হাত একদিন যদি ঐ জলে-স্থলে অন্তরিক্ষে
ছুটে চলে যায়
সেই দিন আমাকেও নির্বাসন দিও-
এ-পৃথিবী পার করে ফেলে দিও অন্য কোনো গহন অরণ্যে।

যদি রাজদণ্ড দাও- যদি ফাঁসিকাষ্ঠে স্তব্ধ হয় এ-দেহ আমার
সব আমি মাথা পেতে নেবো;
শুধু আমি কিছুতেই মানবো না
আমার বুকের ’পরে চেপে থাকা আগস্টের সম্মিলিত ঘাতক আঁধার।

রবিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

দোষ - রুদ্র গোস্বামী

যদি দুজন যাস
ট্রেন কিংবা বাস
সুন্দরী কেউ থাক
তোর দিকে তাকাক
যদি প্রেমিক হোস
তুই তাকালে দোষ

আমার চোখে বৃষ্টি ভিজছে খুব - রুদ্র গোস্বামী

ভীষণ একলা হয়ে যাচ্ছি আরও দূর
আমি একলা হেঁটে যাচ্ছি সমুদ্দুর
আয় একটিবার তুই সন্ধ্যা নামার আগে
আয় একটিবার তুই বুকের বারান্দায়
আয় একটি বার তুই অভিমানে রাগে
আয় একটিবার তুই বাকবিতন্ডায়
তোকে বুঝতে থাকার চেষ্টায়
আমি পেরুচ্ছি রোদ্দুর
আমি একলা হেঁটে যাচ্ছি সমুদ্দুর
আমার চোখে বৃষ্টি ভিজছে খুব
ক্লান্ত পাতায় ঘুমের আফসোস
আয় একটিবার তুই স্বপ্ন দেখার রঙ
আয় একটিবার তুই ঠোঁটের শব্দকোষ
একলা আমার লাগছে ভীষণ ভয়
আমি নিজের কাছেই বাড়াচ্ছি বিস্ময়
তোকে ভুলতে থাকার চেষ্টা
আমার হারিয়ে দিচ্ছে সুর
আমি একলা হেঁটে যাচ্ছি সমুদ্দুর

ক্যাকটাস - রুদ্র গোস্বামী

প্রতিশ্রুতি মতো অর্ণা আজ পার্কে আসে দুদিন পর ঈশানের সাথে ওর বিয়ে। অর্ণা দেখতে পায় একা একটা বেঞ্চে বসে ঈশান এক টুকরো ইট নিয়ে মার্বেল বেঞ্চের উপর খুব জোরে জোরে ঘসছে।
কাছে গিয়ে ঈশানকে ডাকে অর্ণা, ঈশান আরও জোরে ইটের টুকরোটা মেঝের উপর ঘসতে ঘসতে অর্ণার দিকে তাকায় তারপর খুব জোর ধমকে ওকে বলে “তোমাদের কাউকে আমি বিশ্বাস করি না চলে যাও এখান থেকে ।”
এর আগে কখনো ঈশানকে এইরকম বাজে ব্যাবহার করতে দেখেনি অর্ণা । রাগে অপমানে জিন্সের পকেট থেকে সেলফোন বার করে ঈশানের বাবাকে রিং করে অর্ণা। কিছুক্ষণ বাদে ঈশানের বাবা পার্কের কাছে আসে, দূর থেকে ছেলেকে দ্যাখে এবং তারপর অর্ণাকে নিয়ে বাড়ি ফিরে ঈশানের ঘরে নিয়ে যায়।
ঘরে পা রেখে অর্ণা বিস্ময়ে হাঁ হয়ে দ্যাখে চার দেয়াল ভরতি চার ছ’টান পেন্সিলে আঁকা অসংখ্য ঘিজিঘিজি ঘসা চারকোণ আর তার পাশে একটা করে প্রায় স্পষ্ট নারী আকৃতি । অর্ণা ঈশানের বাবাকে বলে ঠিক এমনই একটা নারী আকৃতির পাশে আঁকা আর একটা অস্পষ্ট ছবির উপর ইটের টুকরো নিয়ে এলোপাথাড়ি ঘসছিল ঈশান।
ঈশানের বাবা তখন অর্ণাকে বলতে শুরু করে ... ঈশানের তখন ক্লাস টু ওকে ইস্কুল পার্কের বেঞ্চে বসিয়ে এইরকমই একটা দিনে ওর মা ওর নতুন কাকুর সাথে চলে যায়। সেদিন থেকে ঈশানের উচ্চতা বাড়ার সাথে পাল্লা দিয়ে এই ছবিগুলো ক্রমশ দেয়ালের উপরের দিকে উঠছে ...

যেতে পারবে? - রুদ্র গোস্বামী

এই যে তুমি বার বার চলে যাই বলো
ধরো তুমি চলে গেছো
খানিকক্ষণ পর ফিরে এসে যদি দেখো
কষ্টে ভিজে যাচ্ছে আমার বুক
আমার চোখের দিকে তাকিয়ে
তুমি কি তখন মুখ লুকাতে পারবে ?
বলো পারবে ?
ধরো এসে দেখো যদি
হাতে আমার ভেজা রুমাল, আর
তখনও অপেক্ষায় আমি,যাইনি কোথাও
যদি বলি, এলে কেন ?
চাই না তোমায়,চলে যাও যেখানে ছিলে
আমাকে জড়িয়ে না ধরে তখন তুমি পারবে?
বলো পারবে ?
এই যে আমাদের কাছে
আমিও আসি আর তুমিও আসো
এ কথা তো জানে দশজনে
ভালবাসাবাসি কতখানি আছে তোমার আমার
এতো ভালবাসা ছেড়ে
তুমি কি কোথাও যেতে পারবে ?
বলো যেতে পারবে ?